জিলহজ্জ মাসের রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ ও আরবি

আরবি বারো মাসের সর্বশেষ মাস জিলহজ। এই জিলহজ্জ মাসের মধ্যে আপনি যদি নিয়ত টিক করে রোজা রাখতে পারেন তাহলে অনেক বরকত ও অনেক গুনাহ মাপ করে এবং রহমত ও বরকত দেয় বান্ধাকে।

জিলহজ্জ  এর ফজিলত:

হজ করার জন্য এটি সর্বোত্তম মাস হলো জিলহজ্জ মাস। মাসে আমরা সবাই হজ ফালন ও ঈদ ফালন করে তাকি। আল্লাহ তাআ’লা রহমতে মুসলমানদের একটি খুশির মাস হলো এই জিলহজ্জ মাস। এই মাসে সবাই অনেক বেশি ফজিলত ও সোয়াব পায়। এই মাসের মধ্যে মুসলমান মানুষের সবচেয়ে খুশির মাস সেটা হলো ঈদ। ঈদুল আজাহা মানে কোরবানির ঈদ পালন করা হয়।

আরাফাহ (জিলহজ মাসের নবম তারিখ) দিনটি ক্ষমা ও মুক্তির দিন। এ দিনে সাওম পালন করলে তা দুই বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গণ্য হয়। যেমন হাদিসে এসেছে—

সাহাবী আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ স. বলেন : আরাফার দিনের সাওম আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিগত ও আগত বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করেন।

মুসলিম-১৬৬২

হযরত মোহাম্মদ সা: সে যে যে আমল গুলো করছেন সে আমল গুলো আমাদের অনুসরণ করতে হবে তাহলে আমরা জান্নাত বাসি হতে পারব। যেন তারা কল্যাণকর স্থানগুলো পরিদর্শন করে এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে তিনি রিজিক হিসেবে তাদের যে চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন তাতে যেন আল্লাহর নাম স্মরণ করে, অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার করো এবং দুস্থ ও অভাবগ্রস্তদের আহার করাও।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৮)

وَالْفَجْرِ ﴿1﴾ وَلَيَالٍ عَشْرٍ.

‘‘শপথ প্রত্যুষের ও দশ রজনির।’’ [1]

দশ রজনি বলতে জিলহজ্জের প্রথম দশ রজনি বুঝায় এ ব্যাখ্যা ইবনে আব্বাস রা. ইবনে যুবায়ের ও মুজাহিদ রহ. সহ অনেকের। প্রসিদ্ধ মুফাসসির ইবনে কাসির এ মতটিকেই বিশুদ্ধ বলেছেন।[2]

হাদিসে জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম দিন বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হযরত মোহাম্মদ সা: এই ১০ দিন অন্যান্য দিনের চেয়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। আল্লাহ তাআ’লা ও আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা: এই দিন গুলোর মধ্যে অবনত দিন।

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত নবী কারিম (ﷺস.) বলেছেন: এ দশ দিনে নেক আমল করার চেয়ে আল্লাহ রাববুল আলামিনের কাছে প্রিয় ও মহান কোন আমল নেই। তোমরা এ সময়ে তাহলীল (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ) তাকবির (আল্লাহু আকবার) তাহমীদ (আল-হামদুলিল্লাহ) বেশি করে আদায়কর।[4]

আল্লাহ রাববুল আলামিন বলেন:

لِيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ.

‘‘যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’’[5]

জিলহজ্জ রোজার নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা :-

সেহরি খাওয়ার পড় থেকে দিনের শেষ ভাগে মনে মনে পড়লেই সেটা আদায় হয়ে যাবে। জিলহজ্জ রোজার নিয়ত  ঠিক ফরজ রোজার মতই নিয়ত করলেই হবে। জিলহজ্জ রোজার অনেক ফজিলত তু আছে। এই রোজা রাখলে আল্লাহ তাআ’লা সকল মুসলমানদের সকল গুনাহ থেকে মাফ করে দেয়।

জিলহজ্জ রোজার নিয়ত বাংলা:

আমি আজ জিলহজ্জ রোজা রাখার নিয়ত করলাম। এভাবে পড়লেই হয়ে যাবে। যারা আরবি পাড়েন তারা ঐটায় পড়ায় উত্তম।

নিয়ত মানে হলো কোন কাজ করার মন মানসিকতা তৈরি করাকে বুঝায়। নিয়ত শুধু মুখে বলতে হবে তা না,  মনে মনে বা ইচ্ছে করলেই আদায় হয়ে যাবে।  রোজার কোন সমস্যা হবে না।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা সহ বাকি সকল রোজা রাখব আল্লাহ তাআলা তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০১; তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৩)

তিনি বলেন, ‘তোমারদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

জিলহজ্জ রোজার নিয়ত টিক রমজানের রোজার নিয়তের মতই, তাই রমজানের রোজার নিয়ত করলেই হয়ে যাবে।

রোজার আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ :

 নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

রোজার নিয়তের বাংলা অর্থ :

 হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

তাই আমরা জানতে পারলাম যে জিলহজ্জ  রোজার নিয়ত। আল্লাহ তাআ’লা রোজাদার ব্যক্তির সকল গুনাহ মাপ করে এবং যা ছায় তা দেয়। রোজা রাখলে আল্লাহ তাআ’লা অনেক নেকি পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে আমরা নফল রোজা রাখব আমিন।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।