তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল

রমজান মাস রহমত বরকত ও নাজাতের মাস। এই মাসে সকল মাসের সেরা মাস। এই মাসেই রোজার পাশাপাশি তারাবির নামাজ পড়া হয়। তারাবির নামাজ ইচ্ছে কৃতভাবে ছেড়ে দিলে গুনাহ হবে। তারাবির নামাজ সুন্নত না নাকি নফল। এক কথায় তারাবির নামাজ হলো সুন্নতে মুয়াক্কাদা। সুন্নতের থেকেও বেশি ওয়াজিব এর কাছাকাছি। এটি সুন্নতের থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ।

তারাবির অর্থ কি:

তারাবিহ আরবি শব্দ, যা তারবিহাতুন শব্দের বহুবচন, যার অর্থ হলো আরাম, প্রশান্তি অর্জন, বিরতি দেওয়া, বিশ্রাম নেওয়া ইত্যাদি। এই তারাবির নামাজ রোজার পাশাপাশি এটি করলে আল্লাহ তাআলা তাকে অনেক ফজিলত দিবে। এটি সুন্নতের থেকেও বেশি ওয়াজিবের পরিপূর্ণ নেক পাওয়ার জন্য এই তারাবির নামাজ পড়তে হবে।

তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল:

মূলত তারাবির নামাজ না সুন্নত আর না নফল। আসলে এটা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। যা সুন্নতের থেকেও বেশি ওয়াজিব এর কাছাকাছি। নামাজ ছাড়া কোন ইবাদতই কবুল হয় না। তারাবির নামাজ পড়া এটি অনেক ফজিলত পূর্ণ। তারাবির নামাজ শুধু রমজান মাসেই পড়া হয়ে তাকে। রোজার পাশাপাশি তারাবির নামাজ পড়লে আল্লাহ তাআলা অনেক ফজিলত ও সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন।

তারাবির নামাজের মধ্যে কোরআন শরিফ পড়ে খতম দেওয়া যায়। যা অনেক ফজিলত পাওয়া যায়। সালাত আদায় করার ক্ষেত্রে প্রতি ৪ রাকাত নামাজের পর পর বিশ্রাম নেয়া হয় বিধায় উক্ত নামাজকে তারাবিহ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তারাবির নামাজ মূলত ২০ রাকাত পড়ে তাকে কেউ কেউ ৮ রাকাতও পড়ে তাকে। ২০ রাকাত পড়াই উত্তম। প্রতি ৪ রাকাত পড় পড় বিরতি দিয়ে দিয়ে পড়া হয়ে তাকে। বিরতির সময় কিছু দোয়াও পড়ে তাকে। এভাবে সূরা তারাবি ও খতমে তারাবি পড়া হয়ে তাকে।

তারাবির নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, যা ওয়াজিবের কাছাকাছি। এটি সুন্নতের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারাবিহ সুন্নতে মুআক্কাদা। কেননা, রাসূলে করীম ﷺ তারাবিহ সম্পর্কে বলেছেন,

كتب الله عليكم صيامه وسننت لكم فيه قيامه

আল্লাহ তাআলা এই মাসের রোযা তোমাদের উপর ফরয করেছেন এবং এই মাসে রাত জেগে নামায পড়াকে সুন্নত করেছি। (নাসাঈ ২২১০)

এজন্য ইমাম নববী বলেন, صلاة التراويح سنة بإجماع العلماء আলেমগণের ইজমা অনুযায়ী তারাবিহর নামাজ পড়া সুন্নত। (আলমাজমূ ৪/৩১)

মনে রাখবেন, সুন্নতে মুআক্কাদা ওয়াজিবের মতই। এটি ফালন করতেই হবে। তারাবির নামাজ পড়া অনেক ফজিলত পাওয়া যায় তাহলে আমরা কেন এই এত ফজিলত পূর্ণ কাজ করব না।

হাদিসে বর্ণনা করা আছে, রমজানের শেষ রাতে সকল উম্মতকে মাফ করা হয়। রোজা কিয়ামতের দিন মুমিন ব্যক্তির জন্য শুপারিশকারী হবে।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় তারাবীর সালাতে দাঁড়াবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। হাদীসের রাবী ইব্নু শিহাব (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইনতিকাল করেন এবং তারাবীর ব্যাপারটি এভাবেই চালু ছিল। এমনকি আবু বকর (রাঃ) এর খিলাফতকালে ও উমর (রাঃ) এর খিলাফতের প্রথমভাগে এরূপই ছিল।
সহিহ বুখারী হাদিস নং ২০০৯

তাই আমরা বলতে পারি যে, তারাবির নামাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারন রোজা ও অন্য এবাদত গুলো নামাজের থেকে উত্তম। নামাজ ঐ এবাদত গুলোকে সঠিক ও আল্লাহ তাআলা কাছে কবুলের মাত্ররা বাড়িয়ে দেয়। রমজান মাস দোয়া ও নাজাতের মাস। রোজার পাশাপাশি নামাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাকে। তাই আমরা বেশি বেশি করে নামাজ রোজা পালন করব।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।