আত্তাহিয়াতু আসলে, আল্লাহর সাথে আমাদের মহানবী (সঃ) কথোপকথন একটা অংশ।

নামাজ পড়া  আল্লাহ  তাআ’লা  এক‌টি সবচেয়ে বড় এবাদত । আর এই এবাদত আল্লাহ তাআ’লা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। নামাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তেমনি আত্তাহিয়াতু একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এটি ওয়াজিব।

নামাজে আত্তাহিয়াতু পড়ার ইতিহাস:

আত্তাহিয়াতু আসলে, আল্লাহর সাথে আমাদের মহানবী (সা:) কথোপকথন একটা অংশ। প্রথম থেকে শুরু – হযরত মোহাম্মদ সা: যখন মক্কায় ইসলাম প্রচার করছিলেন তখন আমাদের নবী উপর কত আক্রমণ এসেছিল। এত কষ্টের মধ্যেও উম্মতের কথায় ভাবতেন। কিভাবে আমার উম্মত নাজাত পাবে। আল্লাহর কাছে এই গুলোই বলতে।

হযরত খাদিজা (রাঃ) ইন্তেকাল করেছেন। মক্কায় অল্প লোক ছিল ইসলাম ধর্মীয় বিশ্বাস করে। প্রিয় নবী রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষে অল্প কিছু মানুষ ছিল। হযরত মুহাম্মদ সা: অনেক চিন্তায় পড়ে গেলেন। দিনে দিনে রাসুলের (সাঃ) প্রতি কোরাইশদের অত্যাচারের মাত্রাও বেড়ে গেছে। তখন হযরত মোহাম্মদ কে আল্লাহ তাআ’লা ডেকে নিলেন রজব মাসের এক মহিমাম্বিত রজনীতে তার প্রিয় বন্ধুকে হযরত জিব্রাইল (আঃ) এর মাধ্যমে তার সান্ধিধ্যে ডেকে নিলেন, যা ইতিহাসে মে’রাজ নামে পরিচিত। এখানে আল্লাহ তাআ’লা সাথে কথা বলে বাইতুল্লাহ মোকাদ্দাস এ চলে যান। তখন প্রথম আসমান দ্বিতীয় আসমানে এবং তৃতীয় সিদরাতুল মুনতাহায় পৌছলেন। দুজন দুজনার খুব নিকটবর্তী হলেন। আল্লাহ হলেন মেজবান আর আমার নবী (সাঃ) হলেন মেহমান। আমাদের মহানবী (সঃ) ইসরাউল মিরাজ যাত্রার সময় এই কথোপকথন হয়েছিলো মহান আল্লাহর সাথে!

মহানবী (সঃ) যখন আল্লাহর সাথে কথোপকথন শুরু করেন

তখন আমার আপনার প্রিয় নবী আল্লাহ তাআ’লা কাছে তিনটি জিনিস ছেয়ে বসেন।

আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত্তয়্যিবাত” “সকল মর্যাদাব্যঞ্জক ও সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্য। সমস্ত শান্তি, কল্যাণ ও প্রাচুর্যের মালিক একমাত্র আল্লাহ। সব প্রকার পবিত্রতার মালিকও তিনি।” এক কথায় রাসুল (সাঃ) আর্থিক, শারিরীক ও মৌখিক সব ধরনের ইবাদাত একমাত্র আল্লাহর জন্য তোহফা হিসেবে পেশ করলেন।

আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ সা: শুধু আমাদের কথায় চিন্তা করেছেন সব সময়।  আল্লাহ তাআ’লা কাছে সব সময় আমাদের জন্য কান্না করছে। আমার উম্মত কিভাবে নাজাত পাবে। কোন সময় নিজেকে নিয়ে এত চিন্তায় মগ্ন ছিল না। সব সময় উম্মতের কথায় ভাবতেন। আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) আল্লাহর কাছে আর ছেয়ে বলেন :-

আসসালামু আ’লাইনা ওয়া আ’লা- ই’বাদিল্লাহিস সলিহীন” “আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর সকল নেক বান্দাহদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।”

আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ সা: ইসরাউল মিরাজ যাত্রার সময় এই কথোপকথন হয়েছিলো মহান আল্লাহর সাথে!  এই কথা শুনে যত ধরনের ফেরেস্তাগন আছে সবাই এক কণ্ঠে বলে উঠল:

“আশহাদু আল লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মোহাম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসুলুহু” “আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি মোহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দাহ এবং রাসুল।”

আত্তাহিয়াতু নামাজে পড়ার কারন :

আত্তাহিয়াতু আসলে, আল্লাহর সাথে আমাদের মহানবী (সঃ) কথোপকথন একটা অংশ। হযরত মোহাম্মদ সা  আমাদেরকে  আল্লাহ তাআ’লা সাথে  নামাজেই কত সুন্দর  ভাবে কথা বলার সহজ নিয়ম দেওয়া হয়েছে। নামাজ একমাত্র বন্ধার সাথে আল্লাহর কথা বলা। আত্তাহিয়াতু নামাজে পড়ার সাথে সাথে বন্ধার আল্লাহ তাআ’লা সাথে সরাসরি কথা হয়। আল্লাহ তাআ’লা সব গুনগান করা হয়। আল্লাহর সকল ধরনের ধরনের কাজে শুকরিয়া জানানো হয়। আল্লাহ তাআ’লা সরাসরি বন্ধার কথার উত্তর দেন।

হযরত মোহাম্মদ সা: এমন একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছে যে বন্ধা যাতে আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা ও সকল ধরনের কিছু ছায়তে পারেন। আমাদের নবী রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কথায় ভাবতেন আমার উম্মত কিভাবে জান্নাতে যাবে।

আত্তাহিয়াতু একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া। যা পড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি ছাড়া নামাজ হয় না। নামাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তেমনি আত্তাহিয়াতু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আমরা সকলেই এই দোয়াটি ভালো করে মুখস্ত করব এবং অন্যকে ভালো করে শিখাব। আল্লাহ তাআ’লা সবাইকে শিখার তুওপিক দান করুক আমিন।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।