মুসলমানদের কোরবানি ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ তাআলা নামে পশু জবাই করার মাধ্যমে এটি পালন করা হয়। কোরবানির সময়কাল হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। এই তিন দিনের যে কোনো দিন কোরবানি করা জায়েজ। তবে প্রথম দিন কোরবানি করা সর্বাপেক্ষা উত্তম।

আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)

পশু কিবলার দিকে ফিরিয়ে যে দোয়া পড়বে

إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيفًا، وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ، إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ، اللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ ‘

উচ্চারণ: ইন্নি ওয়াজ জাহতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাযি ফাতারাছ ছামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকিন। ইন্না সালাতি ওয়া নুসুকি ওয়া মাহ ইয়ায়া ওয়া মামাতি লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। লা শারিকা লাহু ওয়া বিজালিকা উমিরতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমিন।…বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার।

অর্থ : নিশ্চয়ই আমি দৃঢ়ভাবে সেই মহান সত্তার অভিমুখী হলাম, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই। নিশ্চয়ই আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ—সবই বিশ্ব প্রতিপালক মহান আল্লাহর জন্য নিবেদিত। তাঁর কোনো শরিক নেই। আমি এ কাজের জন্য আদিষ্ট হয়েছি। আর আমি আত্মসমর্পণকারীদের একজন। আল্লাহর নামে, আল্লাহ সবচেয়ে মহান।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৮৬; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২১)

যদি কেউ এ দোয়াটি না পারেন তবে ছোট্ট এ অংশটুকু পড়বেন-


بِسْمِ اللهِ اَللهُ اِكِبَر – اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা মিনকা ওয়া লাকা।

নিজের পশু নিজে কোরবানি করলে পশু জবেহ করার পর এ দোয়া পড়া-

اَللهُمَّ تَقَبَّلْ لَهُ مِنِّى كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبِكَ مَحَمّدٍ وَّ خَلِيْلِكِ اِبْرَاهِيْم

অন্য কেউ কোরবানি বা অন্য কারো কোরবানি করলে এ দোয়া পড়া-

বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিন্নি কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইবরাহিম।’

اَللهُمَّ تَقَبَّلْ لَهُ مِنِكَ-مِنْكُمْ كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبِكَ مَحَمّدٍ وَّ خَلِيْلِكِ اِبْرَاهِيْم

বাংলা উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা তাকাব্বালহু মিনকা-মিনকুম’ কামা তাকাব্বালতা মিন হাবিবিকা মুহাম্মাদিও ওয়া খালিলিকা ইবরাহিম।’

যদি কেউ ঐ কোরবানির সময় দোয়া না পারে তাহলে এই টুকো পড়লেই হবে-
পুরো দোয়া না পারলে অন্তত “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলে কুরবানী করলে চলবে। তবে আল্লাহর নাম ছাড়া কোনভাবেই কুরবানি জায়েজ হবে না।

যার ওপর আল্লাহর নাম (বিসমিল্লাহ) উচ্চারণ করা হয়েছে তা থেকে তোমরা আহার করো।’ (সূরা: আনয়াম, আয়াত: ১১৮)।

অতএব আমরা নিয়ম ও হাদিস মেনে কোরবানি করব এবং নামাজ পড়ব। কোরবানির মাংশ তু আমরাই খাব কিন্তু নিয়ত যদি ঠিক না তাকে তাহলে আমরা এর বিনিময়ে কোন কিছু পাব না। সকল ইবাদতের মূল কাজ হলো নিয়ত ঠিক করা। আমরা নিয়ম নিয়ত ঠিক করে এবাদত করত ও কোরবানি দিতে পারি সকলকে তৌফিক দান করুক আমিন।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।