মানত রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ ও আরবি এবং ফজিলত

 মানত রোজার  হলো কোন একটা কারনে নিজে নিজে যে মানত করে বলে আমি এমন কাজ করব এতটা রোজা রাখব তাকে বুঝায়। আল্লাহ তাআ’লা ও আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা: এই মানত না করতে বলেছেন। মানত করা ভালো নয় বলেছেন। মানত কোন কাজ না বা যে কাজের জন্য মানত করা হয় সেটি পরিবর্তন শিল নয় এটি আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ সা: বলেছেন।

মানত এর ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

মানতের ফজিলত ছেয়ে গুনাহ হয়ে যায় বেশি কখনো কখনো।  আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা: ও সেই মানতের না করার জন্য বলেছেন । মানত কোন কাজকে পরিবর্তন করতে পারে না। মানত মানুষ করে কিন্তু যদি না পালন করতে পারে তখন লাভের ছেয়ে ক্ষতি হয়ে যায়।

আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা: একটি হাদিসে বলেছেন যে মানত না করতে।  মানত কখনো কোন কিছু পরিবর্তন হয় না। কখনও মানত করবেন না; মানত করা সমীচীন নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “তোমরা মানত করো না; কারণ মানত তাকদীর পরিবর্তন করে না। মানতের মাধ্যমে কৃপণের সম্পদ খরচ করানো হয়।”

কোন কিছু মানত করলে সেটা কখনো কখনো ফরজ হয়ে যায়। যা পালন করা খুবই দরকার হয়ে যায় বা করতে হবে এমন হয়ে যায়। কেউ যদি আল্লাহর কোন একটি আনুগত্য পালন করার মানত করে যেমন- নামায, রোজা তাহলে সে মানত পূর্ণ করা ফরজ। দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য করার মানত করেছে তার উচিত সে আনুগত্য পূর্ণ করা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্য হওয়ার মানত করেছে সে আল্লাহর অবাধ্য হবে না।”[সহিহ বুখারি]

আল্লাহ তাআলা মুমিনদের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন: “তারা মানত পূর্ণ করে এবং সেদিনকে ভয় করে যেদিনের অনিষ্ট সম্প্রসারিত।”[সূরা আল-ইনসান, আয়াত: ৭] এবং কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্বোক্ত হাদিসে মানত পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে মানত করা মাকরুহ। রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের কাজে উম্মতকে নিরুৎসাহিত করেছেন। সাঈদ ইবনু হারেস (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি ইবনে ‘উমার (রা.)-কে বলতে শুনেছেন,  তোমাদের কি মানত করতে নিষেধ করা হয়নি? নবী করিম (সা.) বলেছেন, মানত কোনো কিছুকে বিন্দুমাত্র এগিয়েও নিতে পারে না এবং পেছাতেও পারে না। মানতের মাধ্যমে কৃপণের কাছ থেকে (কিছু ধন মাল) বের করে নেওয়া হয়। (বুখারি, হাদিস : ৬৬৯২)

আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি এরূপ মানত করে যে সে আল্লাহর আনুগত্য করবে, সে যেন তাঁর আনুগত্য করে।

আর যে মানত করে, সে আল্লাহর নাফরমানি করবে, সে যেন তাঁর নাফরমানি না করে। (বুখারি, হাদিস : ৬৬৯৬)

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.) মান্নত করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেন, মান্নত কোনো কিছু ফিরিয়ে দিতে পারে না। মান্নতের মাধ্যমে কেবল কৃপণদের কিছু সম্পদ বের করে আনা হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৬০৮)

বর্ণনায় রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বনি আদমের জন্য যা নির্ধারণ করে রাখেননি, মান্নত তা তাদের জন্য নিয়ে আসতে পারবে না। তবে  কখনো কখনো মান্নত তাকদিরের মোতাবেক হয়ে যায় এবং এর মাধ্যমে কৃপণ লোকদের থেকে এমন সম্পদ বের করে নিয়ে আসা হয়, যা সে বের করতে চায়নি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৬৪০)

রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি আল্লাহ তাআলার আনুগত্যের মান্নত করে, তাহলে সে যেন সেটা করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬৯৬)

তোমরা যা কিছু ব্যয় করো, আর কিছু (ব্যয় করার জন্যে) মানত করো, আল্লাহ পাক অবশ্যই জানেন। ’ -সূরা বাকারা : ২৭০

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যদি মান্নতের রোযা রাখতে সক্ষম না হোন, তাহলে প্রতিটি রোযার জন্য একটি সদকায়ে ফিতির পরিমাণ টাকা গরীবকে দান করে দিতে হবে।

যদিও এতেও সক্ষম না হোন, তাহলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও ইস্তিগফার করুন। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করবেন।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏ “‏ مَنْ نَذَرَ نَذْرًا وَلَمْ يُسَمِّهِ فَكَفَّارَتُهُ كَفَّارَةُ يَمِينٍ وَمَنْ نَذَرَ نَذْرًا لَمْ يُطِقْهُ فَكَفَّارَتُهُ كَفَّارَةُ يَمِينٍ وَمَنْ نَذَرَ نَذْرًا أَطَاقَهُ فَلْيَفِ بِهِ (سنن ابن ماجه، النسخة الهندية-154، رقم-2128، سنن ابى داود، النسخة الهندية-2/472، رقم-3322)

نذر بصوم الأبد فضعف… وإن لم يقدر استفغر الله (فتاوى بزازية، كتاب الصوم، الفصل الرابع فى النذر على هامش الهندية-4/103، الفتاوى الهندية-1/209، جديد-1/272، قاضيخان على هامش الهندية-1/219، الدر المختار مع رد المحتار-5/525)

মানত রোজার নিয়ত সম্পর্কে আলোচনা :-

সেহরি খাওয়ার পড় থেকে দিনের শেষ ভাগে মনে মনে পড়লেই সেটা আদায় হয়ে যাবে। মানত রোজার নিয়ত  ঠিক ফরজ রোজার মতই নিয়ত করলেই হবে। মানত রোজার অনেক ফজিলত তু আছে। এই রোজা রাখলে আল্লাহ তাআ’লা সকল মুসলমানদের সকল গুনাহ থেকে মাফ করে দেয়।

মানত রোজার নিয়ত বাংলা:

আমি আজ মানত  রোজা রাখার নিয়ত করলাম। এভাবে পড়লেই হয়ে যাবে। যারা আরবি পাড়েন তারা ঐটায় পড়ায় উত্তম।

নিয়ত মানে হলো কোন কাজ করার মন মানসিকতা তৈরি করাকে বুঝায়। নিয়ত শুধু মুখে বলতে হবে তা না,  মনে মনে বা ইচ্ছে করলেই আদায় হয়ে যাবে।  রোজার কোন সমস্যা হবে না।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা সহ বাকি সকল রোজা রাখব আল্লাহ তাআলা তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০১; তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৩)

তিনি বলেন, ‘তোমারদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

মানত রোজার নিয়ত টিক রমজানের রোজার নিয়তের মতই, তাই রমজানের রোজার নিয়ত করলেই হয়ে যাবে।

রোজার আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ :

 নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

রোজার নিয়তের বাংলা অর্থ :

 হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

তাই আমরা জানতে পারলাম যে মানত রোজার নিয়ত। আল্লাহ তাআ’লা রোজাদার ব্যক্তির সকল গুনাহ মাপ করে এবং যা ছায় তা দেয়। রোজা রাখলে আল্লাহ তাআ’লা অনেক নেকি পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে আমরা নফল রোজা রাখব আমিন।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।