রমজানের পরের মাস হলো শাওয়াল। এই মাস মুসলিম উম্মাহর কাছে অত্যন্ত গুরুত্ব। কারণ রমজানের রোজা পালনকারীরা এ মাসের ৬টি রোজা রাখলেই সারাবছর রোজা রাখার সওয়াব পায়। রমজানের রোজার পড় এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

শাওয়াল’ শব্দটি আরবি। এর অর্থ হলো উঁচু করা, উন্নতকরণ, পাল্লা ভারী হওয়া, গৌরব করা, বিজয় লাভ করা, প্রার্থনায় হাত উঠানো ইত্যাদি।এই সব গুলো হলো শাওয়াল মাসের অর্থ। এটা  সাথে শাওয়াল মাসের সব গুলোই মিল রয়েছে।

রমজানের সিয়াম পালনের পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত-মুস্তাহাব; ফরজ নয়। শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোজা রাখার বিধান রয়েছে।এই রোজা গুলো রাখলে সারাবছর রোজা রাখল সওয়াব পাওয়া যাবে।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, শাওয়াল মাসে বিয়ে-শাদি করা সুন্নত, যেরূপ শুক্রবারে ও জামে মসজিদে ও বড় মজলিশে আক্দ অনুষ্ঠিত হওয়া সুন্নত। কারণ, মা আয়েশার বিয়ে শাওয়াল মাসের শুক্রবারে মসজিদে নববিতেই হয়েছিল। ছয় রোজা শাওয়াল মাসের বিশেষ সুন্নত।’ (মুসলিম)

 শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত। আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘যখন তুমি (ফরজ দায়িত্ব পালন থেকে) অবসর হবে, তখন (নফল ইবাদতের মাধ্যমে) তোমার রবের প্রতি মনোনিবেশ করো (সুরা-৯৪ ইনশিরাহ, আয়াত: ৮)।’

যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)

শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যারা রমজানে রোজা পালন করল এবং শাওয়াল মাসে আরও ছয়টি রোজা রাখল; তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল (মুসলিম: ১১৬৪; আবু দাউদ: ২৪৩৩; সহিহ-আলবানি)।’ 

عَن أَبي أَيُّوبَ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتّاً مِنْ شَوَّالٍ، كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ». رواه مسلم

বাংলা অনুবাদ: আবূ আইয়ূব আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি রমযানের রোজা পালনের পর শওয়াল মাসের ছয়দিন রোজা রাখল, সে যেন সারা বছর রোজা রাখল।” (মুসলিম) [মুসলিম ১১৬৪, তিরমিযি ৭৫৯, আবু দাউদ ২৪৩৩, ইবন মাজাহ ১৭১৬, আহমদ ২৩০২২, ২৩০৪৪, দারেমি ১৭৫৪]

আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, রমজান মাসে নারীদের ঋতুকাল শুরু হলে রাসুল (সা.) এ সময়কালে তাঁদের রোজা ছেড়ে দিতে এবং এই রোজা পরে কাজা আদায় করার নির্দেশ দিতেন; কিন্তু নামাজ কাজা আদায় করার কথা বলা হতো না। (ওই অবস্থায় নামাজ মাফ) (বুখারি ও মুসলিম; মিশকাত, হাদিস: ২০৩২)।

হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রা.) একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসের সব ফরজ রোজাগুলো রাখল অতঃপর শাওয়াল মাসে আরও ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারাবছর ধরেই রোজা রাখল। (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১১৬৪)

আমরা জানতে পারলাম যে শাওয়াল মাসের রোজা গুরুত্ব ও ফজিলত। রমজান মাসের পড়ে এই রোজা গুলো রাখলে অনেক অনেক নেকি ও ফজিলত আছে। এই ৬ টি রোজা রাখলে সারাবছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।