অকারণে রোজা না রাখার শাস্তি

রোজা সকল মুসলমানদের উপর ফরজ। রোজায় আছা শারীরিক মানসিক স্বাস্থ্য ও দুনিয়ায় এবং আখিরাত নয়কট লাভ করার একটা সুযোগ। আল্লাহ তাআ’লা এই রমজানে রোজার রাখলে আর আমল করলে দশ থেকে ৭০ গুন বাড়িয়ে দেন আমিন।

পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় অভাগা হলো সে রমজান মাস পেয়েও তার গুনাহ মাখ করাতে পারল না।  সে তার গুনাহ মাখ করাইয়া নেকি পারলা ভাবি করাতে পারল না। মুসলমানদের উপর রমজান মাস বোনাস হিসাবে দিয়েছেন যে এই মাসে তার গুনাহ মাফ করিয়ে নিবে। সে হলো সবচেয়ে অভাগা তার এত সুযোগ তাকার পড়েও সে গুনাহ মাখ করাতে পারল না।  সবচেয়ে বড় আপসোস। তারা যেন সারাবছর যে গুনাহ করছে সে গুলো মাখ করাতে পারে। রমজান মাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা: তার আদশ থেকে আমরা অনেক কিছু জানতে পারি যে রোজা রাখার কত নেকি আর ফজিলত পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, কিন্তু রোজার বিষয়টি ভিন্ন। কেননা, রোজা শুধু আমার জন্য, আমিই তার প্রতিদান দেব।’ (মুসলিম-১৫৫১)

ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন:

مَنْ أَفْطَرَ يَوْماً مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ خَرَجَ رُوحُ اَلْإِيمَانِ مِنْهُ

যে ব্যক্তি পবিত্র রমজান মাসে একদিন (শরিয়াহ অজুহাত ব্যতীত) রোজা রাখে না, তার থেকে ঈমানের আত্মা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

(সাওয়াবুল- আমাল-ওয়া-ইকাবুল-আমাল, খ. ১, পৃ. ২৩৬)

আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘একদিন আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, একটি সম্প্রদায় উল্টোভাবে ঝুলছে। তাদের গলাটি ফাড়া এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এরা কারা? বলা হল, এরা ঐসব ব্যক্তি যারা বিনা উযরে রমজান মাসের সিয়াম ভঙ্গ করেছিল।’ (সহীহ ইবনে খুযাইমাহ)

মুসলিম হওয়ার ব্যাপারে সংশয় : 

হাদিসে এসেছে যে মুসলমান রোজা রাখে না সে যেন মুসলিম হওয়ার ্যাপারে সংশয় সন্ধেহ আছেসে সবচেয়ে বড় অভাগা তার গুনাহ আমলকে ভাড়ি করতে পারল না

জাহান্নামে ভয়াবহ শাস্তি :

 যে ্যাক্তি রোজা না রাখে তার যে কত বড় অভাগা তা সে বুঝতে পারে না পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় অভাগা হলো সে রমজান মাস পেয়েও তার গুনাহ মাখ করাতে পারল না

 আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় দুজন মানুষ এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে গেল। সেখানে নিয়ে তারা আমাকে বলল, পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বলল, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। তাদের আশ্বাস পেয়ে আমি উঠতে লাগলাম এবং পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত গেলাম। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারে শব্দ শোনা যাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বলল, এটা জাহান্নামিদের চিৎকার। এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকের কাছে নিয়ে গেল যাদের পায়ের টাকনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নভিন্ন এবং তা থেকে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তারা বলল, এরা হচ্ছে এমন রোজাদার যারা রোজা পূর্ণ করার আগে ইফতার করত।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৭৪৯১)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা আল্লাহভীরু হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)

হাদিস শরীফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওজর বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা পরিত্যাগ করবে, সে যদি ওই রোজার পরিবর্তে আজীবন রোজা রাখে, তবুও ওই এক রোজার ক্ষতিপূরণ হবে না।’

(জামে তিরমিজি: ৭২৩)

উপরের হাদিস থেকে আমরা জানতে পারলাম যে রোজা না রাখলে আল্লাহ তাআ’লা কত বউ শান্তি দিবেন। মুসলমানদের উপর এই রমজান মাস বোনাস হিসাবে দিয়েছেন। তারা যেন সারাবছর যে গুনাহ করছে সে গুলো মাখ করাতে পারে। রমজান মাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের উচিত সকল রোজা রাখা আর সকল আমল করা আমিন।

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।